Friday, July 30, 2010

মন্তব্য গুম করে দিলেই কি বক্তব্য প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায়!

জাকিরের কথা মনে পড়ে গেল। জাকির বলেছিলো যে ঈশ্বরে অবিশ্বাসীকে মুসলমান বানানোর কাজ নাকি অর্ধেকই হয়ে গিয়েছে। কেমন করে? আসুন দেখি জাকিরের চতুর শব্দের খেলা - “যেহেতু ঈশ্বরে অবিশ্বাসী মনে করে “There is no God”, সেহেতু তাকে বাকিটা মানে “But Allah”, শেখাতে পারলেই সে মুসলমান হয়ে যাবে।“





মেরিনার ডিজুসদের রক্ষাকল্পে ঈশপের গল্প বলেছেন “সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছেন?” – এই প্রশ্নের সরল উত্তর নামক পোস্টে। গল্পটা এরকম -

একটি ছবি কে এঁকেছে, এর উত্তরে একজন চিত্রশিল্পীর অস্তিত্ব থাকা আবশ্যক, কিন্তু “চিত্রশিল্পীকে কে এঁকেছে?” এই প্রশ্নটি অবান্তর কেননা চিত্রশিল্পীর ক্ষেত্রে “আঁকা” নামক ক্রিয়াটি প্রযোজ্য নয় ৷ তাই চিত্রশিল্পীর অংকিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, অন্য কথায় “অংকিত নয়” এমন একজন অংকনকারী থাকা সম্ভব ৷ একইভাবে “সৃষ্ট নন”, এমন একজন স্রষ্টা থাকা সম্ভব, তাই বার্ট্রান্ড রাসেলের “হু ক্রিয়েটেড গড মাম?” এই প্রশ্ন করা অযৌক্তিক, অবান্তর, বোকামী


আমি উত্তরে বলেছিলাম

একটা চতুর শব্দের খেলা খেললেন। জাকিরের কথা মনে পড়ে গেল। জাকির বলেছিলো যে ঈশ্বরে অবিশ্বাসীকে মুসলমান বানানোর কাজ নাকি অর্ধেকই হয়ে গিয়েছে। কেমন করে? আসুন দেখি জাকিরের চতুর শব্দের খেলা - “যেহেতু ঈশ্বরে অবিশ্বাসী মনে করে “There is no God”, সেহেতু তাকে বাকিটা মানে “But Allah”, শেখাতে পারলেই সে মুসলমান হয়ে যাবে।“

আসুন দেখা যাক আপনি যে শব্দের খেলাটা খেললেন তার ফাঁকটা কোথায়।

একটি ছবি কে এঁকেছে, এর উত্তরে একজন চিত্রশিল্পীর অস্তিত্ব থাকা আবশ্যক, কিন্তু “চিত্রশিল্পীকে কে এঁকেছে?” এই প্রশ্নটি অবান্তর কেননা চিত্রশিল্পীর ক্ষেত্রে “আঁকা” নামক ক্রিয়াটি প্রযোজ্য নয় ৷ তাই চিত্রশিল্পীর অংকিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, অন্য কথায় “অংকিত নয়” এমন একজন অংকনকারী থাকা সম্ভব ৷

সৃষ্টি আর অংকন শব্দ দুটোর আপাত পার্থক্য দেখিয়ে আপনি বোঝাতে চেয়েছেন যে “সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছেন?” এ প্রশ্ন অবান্তর।


এখন দেখুন “ছবিটি কার আঁকা?” এর বদলে “ছবিটি কার সৃষ্টি?” এ প্রশ্ন করলে কিন্তু আপনার শব্দের খেলা টেকেনা। তখন উত্তর পাওয়া যায় “চিত্রশিল্পীর”। আবার প্রশ্ন করা যায় “চিত্রশিল্পী কার সৃষ্টি?” উত্তর “ঈশ্বরের”। তারপরই পৌঁছে যাওয়া যায় সেই প্রশ্নে যেটার অসারতা প্রমাণের জন্য আপনার এই ছেলে ভুলানো খেলা।

মেরিনারের শাপ শাপান্ত


রাস্তার একটা বদ্ধ পাগলও ক্যানভাসে ছবি আঁকা আর চিত্রকরের মানবজন্ম (তার সৃষ্টি বা তার পৃথিবীতে আসাকে) একই প্রক্রিয়া বলে আখ্যায়িত করবে না। শঠতা, শব্দের খেলা বা মারপ‌্যাঁচও সহজ কথাকে বুঝতে না চাওয়ার মুনাফিক্বি অবশ্য নাস্তিকদের সহজাত বৈশিষ্ট্য!


তারপর পেরিয়ে গেছে অনেক দিন। দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়েছেন মুসাফির। তিনি লিখেছেন -

১০ নং কমেন্টকারী নির্নয়কে বলছি..
আপনি ভুল কথা বলেছেন: এই পৃথিবীতে কেউ কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারেনা। রুপান্তরিত করতে পারে মাত্র।

তেমনি ছবি আকা কোন সৃষ্টি নয়। এর জন্য প্রয়োজন হয়েছে.. রং, হার্ডবোর্ড, তুলি, সহ একজন মানুষ... ইত্যাদি বিভিন্ন উপকরন। আর সব উপকরন গুলির অস্তিত্বই হলো স্রষ্টার কাছ থেকে ধার। যেমন: হার্ডবোর্ড বা কাগজ এটা এসেছে কাঠ থেকে আর, কাঠ এসেছে গাছ থেকে, গাছের অস্তিত্ব মাটি থেকে, আর মাটির অস্তিত্ব... কে সৃষ্টি করেছেন? স্রষ্টা..

অতএব ছবি সহ এই পৃথিবীর মানুষের দ্বারা করা কোন কিছুই সৃষ্টি নয় বরং আবিস্কার, তৈরি, রূপান্তর ইত্যাদি শব্দে আখ্যায়ীত করা যাবে কিন্তু - সৃষ্টি নয়।


এই বক্তব্যের সাথে সাথে তিনি আমাকে কিছু ঐশ্বরিক হুমকিও দিয়েছেন। সেটা এখানে উহ্যই থাক।

মুসাফিরের দাওয়াত পেয়ে আবার পোস্টে ফিরে মেরিনার কে লিখেছিলাম


আপনি যখন অংকন সম্ভব আর অংকন সম্ভব না এই শব্দের খেলা নিয়ে উপস্থিত হলেন তখন আপনাকে বলেছিলাম এই শব্দের খেলার জন্যই এই গল্প তৈরী, যা ইচ্ছা করলে অন্যভাবেও বলা যায়। সৃষ্টি শব্দের ব্যবহার সেকারণেই হয়েছিলো, মানুষের সৃষ্টি আর ছবি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে এক বলা হয়নি। যে উর্দু সর্বস্ব ভাষা জ্ঞানের কারণে আপনি আমার লেখা বুঝতে পারেননি তার কারণে এবারও বুঝবেন কি না জানিনা, তবু লিখছি - “বিষাদ সিন্ধু মীর মোশাররফ হোসেনের অমর সৃষ্টি” বাক্যে ব্যবহৃত সৃষ্টি শব্দের অর্থ সম্পর্কে সবাই ওয়াকিবহাল। “রাস্তার একটা বদ্ধ পাগল” হয়তো সেটা বোঝেনা। আপনারও বুঝতে কষ্ট হচ্ছে, ব্যাপার না। সকল কাজই নিয়তের উপর নির্ভরশীল। কঠিন নিয়তে এগিয়ে যান, অবশ্যই বাংলা শিখে ফেলতে পারবেন। আর একটা কথা অক্ষমদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র অভিশাপ দেয়া। কথার যথাযথ জবাব দিতে না পেরে আপনি অক্ষম ক্রোধে মুনাফিক আখ্যায়িত করলেন। জাহান্নামের শাস্তি ভোগের এই শাপ-শাপান্ত করাটা নিজের কাছে আপনার হেরে যাবার প্রমাণ।


আপনার মগজকে আর একটু নাড়া দেয়ার জন্য লিখে যাই - অংকনের বদলে সৃষ্টি যদি নাও ব্যবহার করেন, বরং “তৈরী” শব্দটা ব্যবহার করেন, তাহলেও আপনার পাতানো গল্পের খেলা টেকেনা।


মেরিনার মুছে দিয়েছে সেই উত্তর। সাথে সাথে ভীম-রুল এর জবাবটাও।

মন্তব্য মুছে দিয়ে কী হল মেরিনার! স্বর্ণলতার ঐতিহাসিক সংকলনে আপনার পাতানো গল্পের খেলা যুগ যুগ ধরে অখন্ডনীয় কঠিন সত্য হিসেবে অক্ষয় হয়ে থাকবে?

আচ্ছা মেরিনার যে জবাব দিতে না পেরে মন্তব্য মুছে দেয় তার কি মুনাফিকের সাথে কোন মিল আছে? জানতে চাইলাম, কারণ আপনি তো মুনাফিকদের ব্যাপারে অনেক জানেন!

No comments:

Post a Comment